রাজশাহীতে প্রাণ কারখানায় ৫ হাজার লোকের কাজের সুযোগ

রাজশাহীতে প্রাণ কারখানায় ৫ হাজার লোকের কাজের সুযোগ

রাজশাহীতে প্রাণ কারখানায় ৫ হাজার লোকের কাজের সুযোগ
রাজশাহীতে প্রাণ কারখানায় ৫ হাজার লোকের কাজের সুযোগ

অনলাইন ডেস্ক: দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে মৌসুমভেদে এখন আম, টমেটো, জলপাই, পেয়ারাসহ কয়েকটি পণ্য সংগ্রহ ও পাল্পিং হচ্ছে। শিগগিরই তরমুজ, আনারস, শসা, অ্যালোভেরার পাল্পিং শুরু হবে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে আগামীতে হিমায়িত খাদ্য, নুডলসসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। কারখানা পুরোদমে চালু হলে চার-পাঁচ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে, যার ৯৫ শতাংশ হবে স্থানীয়।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) রাজশাহীর গোদাগাড়ীর আমানতপুরে বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রাণ গ্রুপের অন্যতম উদ্দেশ্য কৃষিপণ্যের সম্প্রসারণ ও কৃষকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। গোদাগাড়ীতে বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য রাজশাহী অঞ্চলে উৎপাদিত ফসল কোনো ধরনের মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই যেন কৃষকরা স্বল্প পরিবহন খরচে বিক্রি করতে পারেন। এরই মধ্যে বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে স্বল্প পরিসরে আম, টমেটো, পেয়ারা ও জলপাই সংগ্রহের পাশাপাশি কমপোস্ট সার উৎপাদন হচ্ছে। এর সুফল পেতে শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষ। কেননা এ কর্মকাণ্ডের ফলে কৃষকরা কারখানায় পণ্য সরবরাহ শুরু করেছেন।

কামরুজ্জামান কামাল আরও বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন, স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আমরা এরই মধ্যে গ্যাস সংযোগের জন্য আবেদন করেছি। গ্যাস সংযোগ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পেলে শিগগিরই হিমায়িত খাদ্য, নুডলস উৎপাদন হবে এবং এগুলো বিদেশে রফতানি করা হবে। বর্তমানে কারখানায় মৌসুমভেদে এক থেকে দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। নতুন প্ল্যান্ট চালু করা গেলে স্থানীয়দের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

তিনি বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পণ্য এখন বিশ্বের ১৪১টি দেশে রফতানি হচ্ছে। আমরা গোদাগাড়ীতে কারখানা করেছি পণ্যের কাঁচামালের প্রাপ্যতার কথা চিন্ত করে। এখানে গ্যাস সংযোগসহ বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে শুধু প্রাণ-আরএফএল নয়, আরও অনেক কোম্পানি কারখানা স্থাপনের আগ্রহ দেখাবে। এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি দরকার। ফলে এ অঞ্চলে কর্মসংস্থানসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।

বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সারোয়ার হোসেন বলেন, একটা সময় দাম কম হওয়ায় জমিতেই কৃষকের টমেটো নষ্ট হয়ে যেত। ২০১৮ সালের পর থেকে সেই পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। কৃষকরা এখন প্রকৃত দামে টমেটো বিক্রি করছেন। এরই মধ্যে এই অঞ্চলে টমেটোর উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কারখানায় তরমুজ, আনারস, শসা, অ্যালোভেরা পাল্পিং করার জন্য পরীক্ষামূলক কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, ক্রেতারা যেন উৎকৃষ্ট মানের পণ্য পায়, সেজন্য আমরা পণ্যের কাঁচামালকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই। কারখানায় অত্যাধুনিক মেশিনে সম্পূর্ণ অ্যাসেপটিক পদ্ধতিতে পাল্পিং করা হয়। এখানে বর্জ্য দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে খোসা থেকে জৈব সার ও আঁটি থেকে জ্বালানি তৈরি হওয়ায় কারখানাটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। কারখানার তরল বর্জ্যের জন্য বর্তমানে একটি ইটিপি রয়েছে।

মতবিনিময় সভায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সিনিয়র ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান, ডেপুটি ম্যানেজার মাকছুদ-উল-ইসলাম জোয়াদ্দারসহ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকরা ইটিপিসহ বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।

২০১৭ সালে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর আমানতপুরে ১০২ বিঘা জমির ওপর বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তোলে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১০ নভেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply